এক ঘরে শিশুর রক্তাক্ত লাশ, আরেক ঘরে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ঝুলন্ত দেহ
ফরিদপুরের সদরপুরে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। এক ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল পাঁচ বছরের শিশুর লাশ, আরেক ঘরে অন্তঃসত্ত্বা মাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মা’কে মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পূর্বকান্দি গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শিশু হুজাইফা (৫) ও তার মা সুমাইয়া আক্তার (২২)। সুমাইয়া অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। পরিবার জানায়, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর তার সিজারিয়ান অপারেশন হওয়ার কথা ছিল।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সুমাইয়ার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর সদরের কৈজুরীতে। তার স্বামী রমজান খান, ওই গ্রামের মোতালেব মুন্সির ছেলে। ২০২০ সালে তাদের বিয়ে হয়। একমাত্র সন্তান ছিল হুজাইফা। রমজান দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে ছিলেন। দুই বছর আগে দেশে ফেরেন এবং পুনরায় বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
রমজানের বাবা মোতালেব মুন্সি জানান, ঘটনার সময় তিনি গরুর খামারে ঘাস কাটছিলেন। হঠাৎ বাড়ি থেকে চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে এ দৃশ্য দেখেন। তিনি দাবি করেন, রমজান ও সুমাইয়ার মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল, কখনো বড় ধরনের ঝগড়া হয়েছে বলে শোনেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটির শব্দ শোনা যেত।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল বলেন, ‘সুমাইয়াকে হাসপাতালে নেয়া হলেও বাঁচানো যায়নি। শিশুটি ঘরের ভেতর কম্বলে মোড়ানো অবস্থায় গলাকাটা মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল।’
সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদের রায় বলেন, নিহতের স্বামী রমজান ফরিদপুরে আছেন। এখনো তার সঙ্গে কথা বলা যায়নি। তিনি আরও জানান, ‘ঘটনার প্রকৃত কারণ তদন্ত ছাড়া নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়।’ পুলিশ মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
Post a Comment